বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে - গিনি সোনা কত ক্যারেট
প্রত্যেকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে অলংকার। প্রত্যেকেরই অলংকারের নেশা রয়েছে
বিশেষ করে মহিলারা অলংকার পরিধান করতে অত্যন্ত পছন্দ করেন। এ অলংকারাদী তৈরি করতে
অথবা কিনতে হলে অবশ্যই সোনা সম্পর্কে জানতে হয়। প্রত্যেকেরই মনে সোনার সম্পর্কিত
প্রচুর প্রশ্ন আসে। অনেকে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে সে
সম্পর্কে জানতে চান। কোন সোনা ভালো, গিনি সোনা কত ক্যারেট তা অনেকেই জানেন না।
আজকের আর্টিকেলটিতে সোনা সম্পর্কে থাকছে প্রত্যেকটি বিস্তারিত।
আমাদের বাংলাদেশের অনেক লোকেরাই জানতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশের কোথায়
সোনার খনি আছে। গিনি সোনার মান কেমন গিনি সোনা কত ক্যারেট আপনি যদি জানেন তাহলে
গিনে সোনার মান অনুমান করতে পারবেন। সোনা সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয়ে জানতে হলে
পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে - গিনি সোনা কত ক্যারেট
বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে
অনেকেই প্রতিনিয়ত জানতে চান বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে। বাংলাদেশে সোনার
খনি বা সোনার কোন প্রাকৃতিক মজুদ এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে দেশের কিছু স্থানগুলোর
কার্যক্রম দেখে সোনার খনি নামে নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
সোনার মত মূল্যবান খনি উপাদান গুলো পাওয়া যায় সোনার খনি নামে পরিচিত। আমাদের
দেশে প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদ রয়েছে।
এর কিছু অংশ উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে আবার কিছু অংশ এখনো উত্তোলন করা যায়নি। যে
স্থানগুলোতে এরকম মূল্যবান খনিজ সম্পদ পাওয়া গেছে সে স্থানগুলোকে সোনার খনি বলা
হয়। বাংলাদেশের মূল্যবান খনিজ সম্পদ গুলো হলো প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, কঠিন
শিলা, নুড়ি পাথর, চুনাপাথর, গুনডি শিলা, চীনা পাথর, কাচবালি অত্যন্ত মূল্যবান
খনিজ সম্পদ।
এ খনিজ সম্পদ গুলো যেখানে পাওয়া যায় সেই স্থানগুলোকে সোনার খনি বলা হয়।
তাছাড়া কিছু লোকমুখে প্রকাশ পেয়েছে বাংলাদেশের সোনার খনি রয়েছে। তাও আবার একটি
নয় বাংলাদেশের তিনটি সোনার খনি রয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বিমানবন্দর কে
সোনার খনির সাথে তুলনা করা হয়েছে।
অন্যান্য বিমানবন্দর গুলোতেও সোনা পাওয়া যায় তবে এই তিনটি বিমানবন্দরের তুলনায়
কিছুটা কম। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বিমানবন্দরে প্রচুর পরিমাণে সোনা পাওয়া
যায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সোনার খনি হলো ঢাকা শহরে বিমানবন্দর। শুল্ক
গোয়েন্দা ও অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী বিগত চার বছরে ৩টি খনি থেকে মোট ১ টনেরও
বেশি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে,
যা ২৭ মনেরও বেশি। এই সোনা গুলো বিমানবন্দরের মাধ্যমে পা*চার করার চেষ্টা করা
হয়েছিল যা গোয়েন্দা বিভাগের ধরতে পেরেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে অনৈতিকভাবে কিছু
সোনা বাংলাদেশ আনা হয় যা গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন। আবার বাংলাদেশ থেকে পাচার
করার সময়ও কিছু সোনা গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন। এভাবে প্রতি বছর মোট ৬ মনেরও বেশি
সোনা উদ্ধার করেছেন।
এভাবে বাংলাদেশের এই তিনটি বিমান বন্দরের নাম সোনার খনিতে প্রকাশ পেয়েছে। প্রিয়
পাঠক আশা করি বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
গিনি সোনা কত ক্যারেট
অনেকে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে ও গিনি সোনা কত ক্যারেট তা
জানতে চান। যিনি সোনা কত ক্যারেট তার নির্ধারিত হয় সোনার বিশুদ্ধতার ওপর। আমরা
সর্বোচ্চ মানের ২৪ ক্যারেট সোনা কে বিশুদ্ধ সোনা হিসেবে চিনি। ২৪ ক্যারেটের সোনা
সবচেয়ে দামি সোনা। ২৪ ক্যারেট সোনার বিশুদ্ধতা থাকে ৯৯.৯% বিশুদ্ধ।
গিনি সোনার বিশুদ্ধতা ২২% এর সাথে ২% অন্যান্য উপাদানের মিশ্রণে গিনি সোনা
প্রস্তুত করা হয়। তাই গিরি সোনার বিশুদ্ধতা অন্যান্য সোনার চাইতে অনেক কম। তবে
আপনি যদি সোনার বিশুদ্ধতা থেকে যিনি সোনা কত ক্যারেট তা নির্ধারণ করতে চান তাহলে
যিনি সোনাকে ২২ ক্যারেট সোনার সাথে তুলনা করতে পারেন।
সোনার বিশুদ্ধতা ও কোন সোনা কত ক্যারেট কতটা খাঁটি ও বিশুদ্ধতা নির্ধারণ করে সে
সোনা কত % বিশুদ্ধ তার ওপর। একমাত্র সোনা পরীক্ষা করেই সোনার মান ও ক্যারেট
নির্ধারণ করা হয়।
- ২৪ ক্যারেট ৯৯.৯% বিশুদ্ধ
- ২২ ক্যারেট ৯১.৬% বিশুদ্ধ
- ১৮ ক্যারেট ৭৫% বিশুদ্ধ
- ১৪ ক্যারেট ৫৮.৩% বিশুদ্ধ
প্রিয় পাঠক উপরে ভিন্ন ভিন্ন ক্যারেটের ভিন্ন ভিন্ন সোনার বিশুদ্ধতা আপনাদের
সামনে তুলে ধরেছি। আশা করি এই সোনার মানের বিশুদ্ধতা দেখে অবশ্যই আপনি গিনি সোনা
কত ক্যারেট তা নির্ধারণ করতে পারবেন।
সোনার অন্য নাম
অনেকেই জানতে চান গিনি সোনা কত ক্যারেট ও সোনার অন্য নাম সম্পর্কে। ভিন্ন ভিন্ন
দেশের ভিন্ন ভিন্ন ভাষার ক্ষেত্রে সোনার নাম ভিন্নরকম। ভিন্ন ভাষায় সোনাকে ভিন্ন
নামে ডাকা হয়। সোনার বিভিন্ন নাম ও উপাধি বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিতে ব্যবহার করা
হয়। সোনা প্রাচীনকাল থেকে ধন-সম্পদ সমৃদ্ধি, পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে
বিবেচিত,
তাই বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সোনার অর্থবহ ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে।
বাংলা ভাষায় সোনাকে হেম, কাঞ্চন, স্বর্ণ, সুরভি নামে ডাকা হয়। ইংরেজিতে গোল্ড,
লাতিন শব্দ উরুম নামে ডাকা হয়। সংস্কৃত ভাষায় আরুন, স্প্যানিশ ভাষায় Ore,
ফরাসি ভাষায় Or, রুশ ভাষায় Zlato, তুর্কি ভাষায় Altin নামে ডাকা হয়। সাধারণত
ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ভিন্ন সংস্কৃতিতে সোনার নাম ভিন্ন রকম।
সোনার খাদ কি
গিনি সোনা কত ক্যারেট, সোনার খাদ কি তা অনেকেই জানেন না। সোনার খাদ বলতে সোনার
সঙ্গে মিশ্রিত অন্যান্য ধাতুকে সোনার খাদ বলা হয়। সবচেয়ে খাঁটি সোনা গুলো
অত্যন্ত নরম হয় আপনি যখন এই সোনা দিয়ে কিছু বানাবেন তখন এটি সহজেই বাঁকা ও
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ছাটি সোনা কে শক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী করতে সাধারণত ভিন্ন ভিন্ন
উপাদান যেমন:
রুপা, তামা, প্যালাডিয়াম, নিকেল এর মিশ্রণ করা হয় যা সোনার খাদ নামে পরিচিত। ২৪
ক্যারেট সোনাই কোন খাদ থাকে না এটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। ২২ ক্যারেট শুনায় ৯১.৬%
খাঁটি সোনা থাকে এবং বাকি ৮.৪% খাদ থাকে।
সোনার ব্যবহার
অনেকে প্রতিনিয়ত সোনার ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চান। সোনা একটি মূল্যবান ধাতু,
সোনা প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সোনার
বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে তার মধ্যে সোনার উজ্জ্বলতা, নমনীয়তা, মরিচানা ধরা সবচেয়ে
বেশি উল্লেখযোগ্য। সোনার ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।
ভিন্ন ভিন্ন উপাদান তৈরিতে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সোনা ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে
গহনা ও অলংকার তৈরিতে প্রচুর পরিমাণে সোনা ব্যবহারিত হয়। অন্যদিকে অর্থনৈতিক
সম্পদ হিসেবে সোনা মজুদ করে রাখা হয়। এটির দেশের অর্থনীতির জন্য রিজার্ভ হিসেবে
কাজ করে। সোনা যেকোনো দেশের একটি অর্থনৈতিক সম্পদ।
যে দেশে যত বেশি সোনা আছে সে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো তত বেশি উন্নত। চিকিৎসা
ক্ষেত্রেও সোনার ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে দাঁতের ফিলিং ও ক্রাউন তৈরিতে সোনা
ব্যবহারিত হয়। অভিজাত পণ্যগুলোতেও বিশেষভাবে সোনা ব্যবহারিত হয়। এরমধ্যে
বিলাসবহুল ঘড়ি, কলম, বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক উপাদান তৈরি করা হয়।
স্বর্ণ কোথায় পাওয়া যায়
বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে ও স্বর্ণ কোথায় পাওয়া যায় এ প্রসঙ্গে অনেকেই
জানতে চান। সোনা সাধারণত ভূগর্ভে খনিজ আকরিক, এবং পাহাড়ি এলাকায় শিলায় পাওয়া
যায়। সোনা প্রাকৃতিকভাবে ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। সোনা
পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে পাওয়া যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ গুলোর মধ্যে চীন,
অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, পেরু, ঘানা তে
প্রচুর পরিমাণে সোনার খনি আছে ও সেখান থেকে সোনা উত্তোলন করা হয়। সোনার
প্রাকৃতিক উৎস হলো নদী, শিলা, আকরিক শিলা, এ ধাতুগুলোর সাথে মিশ্রিত অবস্থায়
সোনা পাওয়া যায়।
স্বর্ণ কত প্রকার
বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে ও গিনি সোনা কত ক্যারেট তা অনেকেই জানেন না।
স্বর্ণ কত প্রকার এ সম্পর্কে অনেকের প্রতিনিয়ত প্রশ্ন করেন। স্বর্ণ-প্রধানত দুই
প্রকার এরমধ্যেঃ
প্রাকৃতিক স্বর্ণঃ প্রাকৃতিক স্বর্ণ খনিজ আকারে পাওয়া যায়।
প্রাকৃতিক স্বর্ণ মূলত সবচেয়ে বিশুদ্ধ স্বর্ণ হিসেবে পরিচিত। প্রাকৃতিক স্বর্ণ
খনিতে, নদীর বালুতে পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ স্বর্ণকে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণ
বলা হয়।
কৃত্রিম স্বর্ণঃ কৃত্রিম স্বর্ণ বিভিন্ন ধাতুর সাথে মিশ্রিত করে তৈরি
করা হয়। কৃত্রিম স্বর্ণ যেমন তামা, রুপা, ও অন্যান্য ধাতু। স্বর্ণের সাথে
বিভিন্ন উপাদানের মিশ্রণে কৃত্রিম স্বর্ণ প্রস্তুত করা হয়। বিভিন্ন উপাদানের
মিশ্রণের পরিমাণ অনুযায়ী এই স্বর্ণের ক্যারেট নির্ধারণ করা হয়। কৃত্রিম
স্বর্ণগুলোর মধ্যে ২২ ক্যারেট, ১৮ ক্যারেট, ১৪ ক্যারেট স্বর্ণ রয়েছে।
লেখক এর মন্তব্য
আজকের আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশের কোথায় সোনার খনি আছে ও গিনি সোনা কত ক্যারেট সে
সম্পর্কে সঠিক তথ্য শেয়ার করেছি। এছাড়া স্বর্ণ সম্পর্কে প্রত্যেকটি বিষয়ে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি স্বর্ণ কিনতে চান তাহলে অবশ্যই স্বর্ণ সম্পর্কে
সঠিক জেনে স্বর্ণ কিনন। এতে প্রতারকদের দ্বারা প্রতারিত হবেন না। আর্টিকেলটি ভালো
লাগলে শেয়ার করুন।
নিয়মিত এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন। এ
সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরি গুলো ঘুরে আসুন।
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url